IBA admission test Question -আইবিএ বিবিএ ভর্তি প্রস্তুতি: জেনে নাও খুঁটিনাটি
এইচএসসি বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা সমাপ্তির পর তোমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করার। এই বিষয়ে স্নাতকশ্রেণির পড়াশোনা হচ্ছে বিবিএ, যার পূর্ণাঙ্গ অর্থ ‘ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র বিবিএ ডিগ্রি বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানজনক ডিগ্রিগুলোর মধ্যে একটি। এই স্বপ্নপূরণের পথে কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, কী কী করণীয় সে ব্যাপারে তোমাদের মনে যত প্রশ্ন রয়েছে, এই লেখাটির মাধ্যমে তার সবগুলোর উত্তর পেয়ে যাবে।
আইবিএ-তে ভর্তি পরীক্ষা কারা দিতে পারে?
তুমি যেকোন গ্রুপ থেকেই পড়াশোনা করো না কেন, (সায়েন্স/আর্টস/কমার্স) এইচএসসি (মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে আলিম) পাশ করার পরে বিবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। বাংলা মিডিয়াম, ইংলিশ মিডিয়াম, মাদ্রাসা- কোন ভেদাভেদ নেই, সবাই পারবে পরীক্ষা দিতে।
ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতে জিপিএ কত লাগবে?
অনেকে মনে করো যে এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন থাকা লাগবে বা ইংরেজিতে এ প্লাস থাকতে হবে। এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে তোমার এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় মিলিয়ে মোট জিপিএ ৭.৫ থাকলেই যথেষ্ট (চতুর্থ বিষয় সহ)।
জিপিএর উপর ভিত্তি করে পয়েন্ট ঠিক করা হয়।
এসএসসিতে তোমার জিপিএ ৪.৫ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, আর ৩.৫ জিপিএ হলে পাবে ২ পয়েন্ট।
এইচএসসিতে জিপিএ ৪ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, এবং জিপিএ ৩ হলে ২ পয়েন্ট।
এই পয়েন্টগুলো যোগ করে মোট ৫ পয়েন্ট পেলেই তুমি যোগ্য পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
আইবিএতে কি শুধু ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরাই পড়ে?
এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। আগেই বলেছি, এখানে বাংলা-ইংরেজি-মাদ্রাসা কোন মাধ্যমের ভেদাভেদ নেই। তুমি যে মাধ্যমেই পড়াশোনা করো না কেন, যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই সুযোগ পাবে আইবিএতে।
একটি মজার তথ্য জেনে অবাক হবে, সাধারনত আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবছর উত্তীর্ণদের ভেতর ইংলিশ মিডিয়ামের চেয়ে বাংলা মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি থাকে! সুতরাং, তোমার ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।
ভর্তিযুদ্ধে কত পরীক্ষার্থী অংশ নেয়? উত্তীর্ণ হয় কতজন?
প্রতিবছর গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয় আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায়। সেখান থেকে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় ১৮০ জন, তাদেরকে একটি চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে বাছাই হয় ভাগ্যবান ১২০ জন শিক্ষার্থী।
এত এত পরীক্ষার্থীদের মাঝে আমি কি পারবো?
প্রথমেই জেনে রেখো, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক হলেও সত্যিকারের প্রতিযোগিতায় আসার যোগ্যতা থাকে খুব কম শিক্ষার্থীরই। যেহেতু আইবিএ-র ভর্তি পরীক্ষা বছরের শেষদিকে হয়, এর আগেই মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলো সমাপ্ত হয়ে যায়। অনেকেই তাই কৌতূহল বা শখের বশে পরীক্ষা দিতে আসে যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া।
তোমার সত্যিকারের প্রতিযোগিতা হবে মাত্র ১০-১৫% পরীক্ষার্থীর সাথে। সুতরাং এত পরীক্ষার্থী দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই।
ভর্তি পরীক্ষা কখন অনুষ্ঠিত হয়? সার্কুলার কখন ছাড়ে?
সাধারনত অক্টোবরের একদম শুরুতেই ফর্ম ছাড়া হয় ওয়েবসাইটে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরুর সাত সপ্তাহের ভেতর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত অক্টোবরের একদম শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা (এটি fixed নয়, বছরভেদে আগে পরে হতে পারে)।
এ তো গেল ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। সব জানার পর যদি লক্ষ্য স্থির করো আইবিএতেই পড়তে চাও, চলো তবে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নেবে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি।
আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষার পাঠ্যসূচি কী?
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোন ধরাবাঁধা পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস নেই। যেহেতু কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই, সুতরাং শতভাগ প্রস্তুতি নেওয়া কারো পক্ষেই সম্ভব না। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই। তুমি যা পড়বে এর ৪০% হয়তো মনে থাকবে না, সেটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। এই ৬০% কে পুঁজি করেই বিজয়ের নিশান উড়িয়ে দিতে পারবে তুমি। সুতরাং “কী কী পড়বে” তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ “কী কী বাদ দিয়ে পড়বে”।
আমাকে কি ইংরেজি ও গণিতে অসাধারন দক্ষ হতে হবে?
আমরা অনেকেই আছি, যাদের ইংরেজির ভিত্তি তেমন শক্ত নয় অথবা গণিতে দুর্বল। তাদের জন্য কাজটি কঠিন নিঃসন্দেহে, কিন্তু যতই দুর্বল হওনা কেন, কঠোর পরিশ্রম করলে তুমি অবশ্যই উত্তীর্ণ হবে।
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে সাধারণত IQ based (বুদ্ধির পরীক্ষা) প্রশ্ন থাকে, মাধ্যমিক পর্যায়ের অঙ্ক থাকে বেশিরভাগ। ইংরেজিতে বেসিক গ্রামারের খুঁটিনাটি জানা থাকতে হয় ভালভাবে, সাথে ভোক্যাবুলারি রয়েছে। সুতরাং ইংরেজি/গণিত এগুলো নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনুশীলনের মাধ্যমে সব আয়ত্তে আনা অবশ্যই সম্ভব।
প্রশ্নের মানবণ্টন
লিখিত পরীক্ষা দুটি পর্যায়ে হয়। নৈর্ব্যক্তিক এবং লিখিত।
নৈর্ব্যক্তিক অংশ
নৈর্ব্যক্তিক (M.C.Q) পরীক্ষার সময় ৯০ মিনিট। এতে তিনটি অংশ থাকে – ইংরেজি (৩০ মার্কস), গণিত (৩০ মার্কস), এনালিটিকাল (বিশ্লেষণী) (১৫ মার্কস)।
তোমাকে ইংরেজি, গণিত, এনালিটিকাল প্রত্যেকটি অংশ আলাদা আলাদাভাবে পাশ করতে হবে।
বেশিরভাগ অংশে ফুল মার্কস পেয়েও কোন একটি অংশেও যদি ফেল করো তাহলে তুমি অনুত্তীর্ণ।
প্রত্যেকটি অংশে Passing Mark (পাশ মার্ক) কতো?
এটি বছরভেদে বা প্রশ্ন কতো কঠিন বা সহজ হয় তার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অংশে Passing Mark 60%।
অর্থাৎ ইংরেজি ও গণিতে তোমাকে কমপক্ষে ১৮ মার্কস এবং এনালিটিকালে কমপক্ষে ৯ মার্কস পেতে হবে।
নেগেটিভ মার্কিং কতো? ক্যালকুলেটর কি আনা যাবে?
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যাবে। সুতরাং একদম নিশ্চিত না হয়ে উত্তর করবে না। আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর কখনোই অনুমোদিত নয়।
ইংরেজি অংশ
ইংরেজিতে মূলত ৩টি অংশ থাকে।
Grammar
Reading (comprehension)
Vocabulary
গণিত অংশ
গণিতেও ৩টি অংশ থাকে।
Algebra
Arithmetic
Geometry
(এগুলো সবই মাধ্যমিক পর্যায়ের অঙ্কের Standard অনুযায়ী)।
এনালিটিকাল অংশ
যথারীতি এখানেও ৩টি অংশ।
Puzzle Solving
Critical Reasoning
Data Sufficiency
কীভাবে নেবে প্রস্তুতি?
মনে রাখতে হবে, অনুশীলনের বিকল্প নেই। তোমাকে প্রত্যেকটি টপিক হাজার হাজার বার অনুশীলন করতে হবে, এতে কোন ঘাটতি রাখা চলবে না। এখন জানাবো প্রস্তুতির জন্য কী কী বই বা অনলাইন সোর্সের প্রয়োজন। সাথে জানাবো কোন বিষয়ের জন্যে কী কী বই পড়া দরকার।
বইয়ের তালিকা
Cliff’s TOEFL
Barron’s SAT
Word Smart (part 1 & 2)
GRE Big Book
GMAT
Math Q Bank (Mentors, Saifur’s)
ইংরেজি:
গ্রামার শেখার জন্য Cliff’s TOEFL শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসম্ভব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। খুঁটিনাটি সব গ্রামাটিক্যাল রুলস খুব ভালভাবে জানতে হবে। এই বইটির প্রত্যেকটা অনুশীলনী বারবার চর্চা করবে।
Barron’s SAT থেকে Sentence Correction & Error Detection এই অংশগুলো খুব ভালভাবে অনুশীলন করবে। SAT এ প্রায় ৩৫০০ শব্দের ভোক্যাবুলারি লিস্ট আছে, সেগুলো সব শিখে ফেলতে পারলে তো কথাই নেই, তা যদি না পারো, SAT এর High Frequency 400 word একদম ঠোঁটস্থ জানতে হবে।
Analogy, Sentence Completion এগুলো GRE Big Book থেকে পড়তে হবে।
এর পাশাপাশি Word Smart বইটি অনেক সাহায্য করবে।
Reading Comprehension, Fill in the blanks এগুলো আইবিএর বিগত বছরের প্রশ্নগুলো বারবার সলভ করো, পাশাপাশি Cliff’s TOEFL & Barron’s SAT থেকেও সলভ করো।
গণিত:
গণিতের প্রস্তুতির জন্য Mentors’ Math Q Bank এই বইটির কোন বিকল্প নেই। Algebra, Arithmetic, Geometry প্রত্যেকটি অংশ বারবার অনুশীলন করবে। আমি নিজে এই বইয়ের প্রত্যেকটা ম্যাথ কমপক্ষে দশবার সলভ করেছি। এত বেশি অনুশীলন করবে যেন প্রশ্ন দেখেই প্যাটার্ন ধরে ফেলতে পারো, মুখে মুখে সলভ করে ফেলতে পারো।
এছাড়া বিগত বছরের আইবিএ -র গণিতের প্রশ্নগুলো বারবার সলভ করো।
GMAT & Barron’s SAT এর গণিতের অংশগুলো অনুশীলন করো বারবার।
Data Sufficiency এর জন্য GMAT এর data sufficiency চ্যাপ্টারের অঙ্কগুলো চর্চা করো।
এনালিটিকাল:
এনালিটিকাল অনুশীলনের জন্য GRE Big Book সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই। এখানে ৩০০+ পাজল আছে, সাধারণত এগুলো থেকেই প্রতিবছর ঘুরেফিরে প্রশ্ন আসে আইবিএতে। সুতরাং এখানের প্রত্যেকটি পাজল একদম ঝালাই করে অনুশীলন করতে হবে।
Critical Reasoning এর জন্য GRE Big Book & GMAT এ দুটো বই কাজে আসবে তোমার।
অনলাইন সোর্স:
বইয়ের পালা তো গেল, প্রস্তুতির জন্য অনলাইনেও অনেক সাহায্য পাবে তুমি।
Majortest.com খুব উপকারী একটি ওয়েবসাইট, এখান থেকে প্রতিদিন অবশ্যই ইংরেজি, গণিত, এনালিটিকাল এগুলো চর্চা করবে। এখানে উত্তর ব্যাখ্যাসহ দেওয়া থাকে, তাই বুঝতে সাহায্য করবে অনেক।
নৈর্ব্যক্তিক অংশের আলোচনা শেষ হলো। এবার দেখে নেওয়া যাক লিখিত অংশে কী কী আছে।
লিখিত অংশ (৩০ মিনিট)
তোমাকে খুব চমৎকার ইংরেজি লিখতে জানতে হবে বা সাহিত্য করতে হবে এমন কোন কথা নেই। যেগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে-
হাতের লেখা পরিষ্কার ও গুছানো হতে হবে।
কোনরকম বানান ভুল করা যাবে না।
বাক্যের গঠনে বিন্দুমাত্র গ্রামাটিক্যাল Error যেন না হয়।
অনর্থক লেখা বড় না করে কম কথায় মূল বক্তব্য সাজিয়ে তুলে ধরতে হবে।
প্রস্তুতি কীভাবে নেবে তা তো জানলে। কিন্তু শুধু প্রস্তুতি নিলেই চলবে না, পরীক্ষার হলে কী কী করণীয় সেটিও জানতে হবে।
পরীক্ষার হলে যা যা অবশ্যই মাথায় রাখবে
সময় ব্যবস্থাপনা করো:
আইবিএ-র প্রশ্ন ক্লাস এইটের শিক্ষার্থীও সলভ করতে পারবে, তুমি সলভ করতে পারছো কিনা তা দিয়ে কিচ্ছু আসে যায় না। কত তাড়াতাড়ি সলভ করতে পারছো সেটি আসল বিষয়। Time Constraint এর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। বাসায় হাজার হাজারবার অনুশীলন করো প্রত্যেকটি ম্যাথ, পাজল যেন পরীক্ষার হলে দেখামাত্র মুখে মুখে সলভ করে ফেলতে পারো।
Time Management এর আরো একটি টিপস – প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই সাফল্য। তোমাকে প্রত্যেকটা Segment-এ আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। কাজেই তুমি যা পারো, শুধু সেটা নিয়েই পড়ে থাকবে না। সময়টাকে ভাগ করে নিবে, পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারো, সেগুলো ঝটপট উত্তর করে ফেলবে। বাকি সময় যেটুকু থাকে তখন অন্য প্রশ্নগুলো সলভ করার চেষ্টা করবে।
বাসায় প্রতিদিন বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর উপর নিজে নিজে মডেল টেস্ট দিয়ে Time Management অনুশীলন করবে। শেষ একমাস কোন Study break নেই। কঠোর রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে।
ভেবেচিন্তে উত্তর দাও:
আগেই বলেছি প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ মার্কস কাটা যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা চিন্তাও করবে না। তোমাকে সব পারতে হবে এটা ভাবার প্রশ্নই আসে না।
যেগুলোর উত্তর তুমি একদম নিশ্চিত সেগুলো আগে দাগাও, পাসিং মার্ক অতিক্রম করতে পারলেই নিশ্চিত থাকো তুমি সফল হবে। ৬০% মার্কস পেয়েও বহু পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়, অথচ ৯০% মার্কস পেয়েও নেগেটিভ মার্কিং এর জন্য কোন একটি সেকশনে পাসিং মার্ক পেরোতে না পারায় ফেল আসে অনেকের।
সারপ্রাইজের জন্য প্রস্তুত থাকো । এমন অনেক প্রশ্ন আসতে পারে পরীক্ষায় যেগুলো আসার কথা তুমি কল্পনাও করোনি।
STAY COOL! মাথা ঠাণ্ডা রাখো! ৯০% পরীক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হয় কেবল এই একটি কারণে। প্রশ্ন সলভ করতে সবাই পারে কিন্তু পরীক্ষার হলে মাথা গরম করে ফেললে সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে তোমার।
আত্মবিশ্বাসী হও:
BE A WINNER! পরীক্ষার হলে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই টেনশন আর ভয়কে প্রশ্রয় দিলে একদম সর্বনাশ হয়ে যাবে। মনে একটাই বিশ্বাস রাখবে – “WHO AM I? I AM A CHAMPION!”
শুধু আত্মবিশ্বাসের জোরেই দেখবে পরীক্ষা অনেক ভাল হবে।
তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য
লিখিত পরীক্ষার আলোচনা শেষ হলো। তোমরা যারা এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের আরেকটি বাধা পেরোতে হবে – মৌখিক পরীক্ষা। এখান থেকে ঝরে যাবে আরো ৬০ জন! এতদূর পথ পাড়ি দিয়ে এই পরীক্ষায় বাদ পড়ে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। তাই মৌখিক পরীক্ষা সম্পর্কেও জানতে হবে ভালভাবে।
চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা
সুন্দর ফরমাল ড্রেস পরে যাবে ভাইভাতে। ফুলহাতা শার্ট, প্যান্ট, সাথে স্যুট পরতে পারো। জুতো একদম পরিষ্কার যেন হয়। চুল আঁচড়ানো হবে। মেয়েদের জন্যও ভাইভা বোর্ডের ভাবগাম্ভীর্য অনুযায়ী যথাযথ পোষাক বাঞ্ছনীয়। তোমাকে দেখে যেন বিনীত এবং মার্জিত রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।
তোমার চলনে বলনে আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকতে হবে। ভাইভা বোর্ডে অনেকভাবে তোমাকে নার্ভাস করার চেষ্টা করা হবে, আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না।
আত্মবিশ্বাস তো থাকতেই হবে, কিন্তু তাই বলে ওভার কনফিডেন্ট হলে চলবে না। বেয়াদবি বা Inappropriate কথা-বার্তা, আচরণ ভুলেও করা যাবে না ভাইভা বোর্ডে।
ভাইভার প্রস্তুতির জন্য আলাদা করে কিছু পড়তে হবে না। সাধারন জ্ঞান, এসএসসি এইচএসসি থেকে কোন পড়া ধরা হয়না সাধারনত ভাইভাতে।
অনেকেই আছে ইংরেজিতে কথা বলায় ফ্লুয়েন্ট না। এটা নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কমন কিছু প্রশ্ন-
তোমার পরিবারে কে কী করেন, কোথায় পড়াশোনা করেছো, কেন আইবিএতে পড়তে চাও, ক্যারিয়ার হিসেবে কোন পথ বেছে নিবে, তোমার জীবনের স্বপ্ন কী ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে গুছিয়ে বলার অনুশীলন করবে। ভাইভা বোর্ডে পারো আর না পারো, ইংরেজি বলে যাবে। ইংরেজির জন্য কাউকে থামিয়ে রাখা যায়না। Accent নিয়ে চিন্তাও করবে না, accent কেউ দেখেনা, ইংরেজি বলতে পারলেই হলো।
ভাইভা বোর্ডে মূলত যাচাই করা হয় তোমার উপস্থিত বুদ্ধি, আচরণে মার্জিত বিনীত মনোভাব, আন্তরিকতা, আত্মবিশ্বাস, স্মার্টভাবে পরিস্থিতি সামলানোর ও মাথা ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা।
শেষকথা
আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আমি যেমন আইবিএ এবং বিইউপি ছাড়া অন্য কোথাও পরীক্ষাই দেইনি। তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য।
প্রস্তুতিতে কোন অবহেলা করা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝে ঈদ, পূজোর ছুটি যাবে, এগুলোর উদযাপনে একটা ঘণ্টাও যেন নষ্ট না হয়। ঘুম, আড্ডাবাজি, ফেসবুকিং, সব বন্ধ এই কয় মাস। ভর্তি পরীক্ষার এই কয়টি দিন তুমি কতটুকু পরিশ্রম করছো তার উপর নির্ভর করবে তোমার বাকি জীবনের পথচলা।
স্বপ্নের আইবিএতে পড়ার লক্ষ্য পূরণ হোক সবার। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-ই নয়, তুমি যদি এই লেখা অনুসারে প্রস্তুতি নাও তাহলে বিইউপি, জাহাঙ্গীরনগর, নর্থ সাউথ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিবিএ পরীক্ষাতেও অনেক ভাল করবে।
WORK HARD, DREAM BIG, REACH FOR THE SKY!
এইচএসসি বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা সমাপ্তির পর তোমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করার। এই বিষয়ে স্নাতকশ্রেণির পড়াশোনা হচ্ছে বিবিএ, যার পূর্ণাঙ্গ অর্থ ‘ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র বিবিএ ডিগ্রি বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানজনক ডিগ্রিগুলোর মধ্যে একটি। এই স্বপ্নপূরণের পথে কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, কী কী করণীয় সে ব্যাপারে তোমাদের মনে যত প্রশ্ন রয়েছে, এই লেখাটির মাধ্যমে তার সবগুলোর উত্তর পেয়ে যাবে।
আইবিএ-তে ভর্তি পরীক্ষা কারা দিতে পারে?
তুমি যেকোন গ্রুপ থেকেই পড়াশোনা করো না কেন, (সায়েন্স/আর্টস/কমার্স) এইচএসসি (মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে আলিম) পাশ করার পরে বিবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। বাংলা মিডিয়াম, ইংলিশ মিডিয়াম, মাদ্রাসা- কোন ভেদাভেদ নেই, সবাই পারবে পরীক্ষা দিতে।
ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতে জিপিএ কত লাগবে?
অনেকে মনে করো যে এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন থাকা লাগবে বা ইংরেজিতে এ প্লাস থাকতে হবে। এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে তোমার এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় মিলিয়ে মোট জিপিএ ৭.৫ থাকলেই যথেষ্ট (চতুর্থ বিষয় সহ)।
জিপিএর উপর ভিত্তি করে পয়েন্ট ঠিক করা হয়।
এসএসসিতে তোমার জিপিএ ৪.৫ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, আর ৩.৫ জিপিএ হলে পাবে ২ পয়েন্ট।
এইচএসসিতে জিপিএ ৪ হলে পাবে ৩ পয়েন্ট, এবং জিপিএ ৩ হলে ২ পয়েন্ট।
এই পয়েন্টগুলো যোগ করে মোট ৫ পয়েন্ট পেলেই তুমি যোগ্য পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
আইবিএতে কি শুধু ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরাই পড়ে?
এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। আগেই বলেছি, এখানে বাংলা-ইংরেজি-মাদ্রাসা কোন মাধ্যমের ভেদাভেদ নেই। তুমি যে মাধ্যমেই পড়াশোনা করো না কেন, যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই সুযোগ পাবে আইবিএতে।
একটি মজার তথ্য জেনে অবাক হবে, সাধারনত আইবিএতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবছর উত্তীর্ণদের ভেতর ইংলিশ মিডিয়ামের চেয়ে বাংলা মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি থাকে! সুতরাং, তোমার ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।
ভর্তিযুদ্ধে কত পরীক্ষার্থী অংশ নেয়? উত্তীর্ণ হয় কতজন?
প্রতিবছর গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয় আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায়। সেখান থেকে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় ১৮০ জন, তাদেরকে একটি চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে বাছাই হয় ভাগ্যবান ১২০ জন শিক্ষার্থী।
এত এত পরীক্ষার্থীদের মাঝে আমি কি পারবো?
প্রথমেই জেনে রেখো, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক হলেও সত্যিকারের প্রতিযোগিতায় আসার যোগ্যতা থাকে খুব কম শিক্ষার্থীরই। যেহেতু আইবিএ-র ভর্তি পরীক্ষা বছরের শেষদিকে হয়, এর আগেই মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলো সমাপ্ত হয়ে যায়। অনেকেই তাই কৌতূহল বা শখের বশে পরীক্ষা দিতে আসে যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া।
তোমার সত্যিকারের প্রতিযোগিতা হবে মাত্র ১০-১৫% পরীক্ষার্থীর সাথে। সুতরাং এত পরীক্ষার্থী দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই।
ভর্তি পরীক্ষা কখন অনুষ্ঠিত হয়? সার্কুলার কখন ছাড়ে?
সাধারনত অক্টোবরের একদম শুরুতেই ফর্ম ছাড়া হয় ওয়েবসাইটে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরুর সাত সপ্তাহের ভেতর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত অক্টোবরের একদম শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা (এটি fixed নয়, বছরভেদে আগে পরে হতে পারে)।
এ তো গেল ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। সব জানার পর যদি লক্ষ্য স্থির করো আইবিএতেই পড়তে চাও, চলো তবে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নেবে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি।
আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষার পাঠ্যসূচি কী?
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোন ধরাবাঁধা পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস নেই। যেহেতু কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই, সুতরাং শতভাগ প্রস্তুতি নেওয়া কারো পক্ষেই সম্ভব না। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই। তুমি যা পড়বে এর ৪০% হয়তো মনে থাকবে না, সেটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। এই ৬০% কে পুঁজি করেই বিজয়ের নিশান উড়িয়ে দিতে পারবে তুমি। সুতরাং “কী কী পড়বে” তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ “কী কী বাদ দিয়ে পড়বে”।
আমাকে কি ইংরেজি ও গণিতে অসাধারন দক্ষ হতে হবে?
আমরা অনেকেই আছি, যাদের ইংরেজির ভিত্তি তেমন শক্ত নয় অথবা গণিতে দুর্বল। তাদের জন্য কাজটি কঠিন নিঃসন্দেহে, কিন্তু যতই দুর্বল হওনা কেন, কঠোর পরিশ্রম করলে তুমি অবশ্যই উত্তীর্ণ হবে।
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে সাধারণত IQ based (বুদ্ধির পরীক্ষা) প্রশ্ন থাকে, মাধ্যমিক পর্যায়ের অঙ্ক থাকে বেশিরভাগ। ইংরেজিতে বেসিক গ্রামারের খুঁটিনাটি জানা থাকতে হয় ভালভাবে, সাথে ভোক্যাবুলারি রয়েছে। সুতরাং ইংরেজি/গণিত এগুলো নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনুশীলনের মাধ্যমে সব আয়ত্তে আনা অবশ্যই সম্ভব।
প্রশ্নের মানবণ্টন
লিখিত পরীক্ষা দুটি পর্যায়ে হয়। নৈর্ব্যক্তিক এবং লিখিত।
নৈর্ব্যক্তিক অংশ
নৈর্ব্যক্তিক (M.C.Q) পরীক্ষার সময় ৯০ মিনিট। এতে তিনটি অংশ থাকে – ইংরেজি (৩০ মার্কস), গণিত (৩০ মার্কস), এনালিটিকাল (বিশ্লেষণী) (১৫ মার্কস)।
তোমাকে ইংরেজি, গণিত, এনালিটিকাল প্রত্যেকটি অংশ আলাদা আলাদাভাবে পাশ করতে হবে।
বেশিরভাগ অংশে ফুল মার্কস পেয়েও কোন একটি অংশেও যদি ফেল করো তাহলে তুমি অনুত্তীর্ণ।
প্রত্যেকটি অংশে Passing Mark (পাশ মার্ক) কতো?
এটি বছরভেদে বা প্রশ্ন কতো কঠিন বা সহজ হয় তার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অংশে Passing Mark 60%।
অর্থাৎ ইংরেজি ও গণিতে তোমাকে কমপক্ষে ১৮ মার্কস এবং এনালিটিকালে কমপক্ষে ৯ মার্কস পেতে হবে।
নেগেটিভ মার্কিং কতো? ক্যালকুলেটর কি আনা যাবে?
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কাটা যাবে। সুতরাং একদম নিশ্চিত না হয়ে উত্তর করবে না। আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর কখনোই অনুমোদিত নয়।
ইংরেজি অংশ
ইংরেজিতে মূলত ৩টি অংশ থাকে।
Grammar
Reading (comprehension)
Vocabulary
গণিত অংশ
গণিতেও ৩টি অংশ থাকে।
Algebra
Arithmetic
Geometry
(এগুলো সবই মাধ্যমিক পর্যায়ের অঙ্কের Standard অনুযায়ী)।
এনালিটিকাল অংশ
যথারীতি এখানেও ৩টি অংশ।
Puzzle Solving
Critical Reasoning
Data Sufficiency
কীভাবে নেবে প্রস্তুতি?
মনে রাখতে হবে, অনুশীলনের বিকল্প নেই। তোমাকে প্রত্যেকটি টপিক হাজার হাজার বার অনুশীলন করতে হবে, এতে কোন ঘাটতি রাখা চলবে না। এখন জানাবো প্রস্তুতির জন্য কী কী বই বা অনলাইন সোর্সের প্রয়োজন। সাথে জানাবো কোন বিষয়ের জন্যে কী কী বই পড়া দরকার।
বইয়ের তালিকা
Cliff’s TOEFL
Barron’s SAT
Word Smart (part 1 & 2)
GRE Big Book
GMAT
Math Q Bank (Mentors, Saifur’s)
ইংরেজি:
গ্রামার শেখার জন্য Cliff’s TOEFL শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসম্ভব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। খুঁটিনাটি সব গ্রামাটিক্যাল রুলস খুব ভালভাবে জানতে হবে। এই বইটির প্রত্যেকটা অনুশীলনী বারবার চর্চা করবে।
Barron’s SAT থেকে Sentence Correction & Error Detection এই অংশগুলো খুব ভালভাবে অনুশীলন করবে। SAT এ প্রায় ৩৫০০ শব্দের ভোক্যাবুলারি লিস্ট আছে, সেগুলো সব শিখে ফেলতে পারলে তো কথাই নেই, তা যদি না পারো, SAT এর High Frequency 400 word একদম ঠোঁটস্থ জানতে হবে।
Analogy, Sentence Completion এগুলো GRE Big Book থেকে পড়তে হবে।
এর পাশাপাশি Word Smart বইটি অনেক সাহায্য করবে।
Reading Comprehension, Fill in the blanks এগুলো আইবিএর বিগত বছরের প্রশ্নগুলো বারবার সলভ করো, পাশাপাশি Cliff’s TOEFL & Barron’s SAT থেকেও সলভ করো।
গণিত:
গণিতের প্রস্তুতির জন্য Mentors’ Math Q Bank এই বইটির কোন বিকল্প নেই। Algebra, Arithmetic, Geometry প্রত্যেকটি অংশ বারবার অনুশীলন করবে। আমি নিজে এই বইয়ের প্রত্যেকটা ম্যাথ কমপক্ষে দশবার সলভ করেছি। এত বেশি অনুশীলন করবে যেন প্রশ্ন দেখেই প্যাটার্ন ধরে ফেলতে পারো, মুখে মুখে সলভ করে ফেলতে পারো।
এছাড়া বিগত বছরের আইবিএ -র গণিতের প্রশ্নগুলো বারবার সলভ করো।
GMAT & Barron’s SAT এর গণিতের অংশগুলো অনুশীলন করো বারবার।
Data Sufficiency এর জন্য GMAT এর data sufficiency চ্যাপ্টারের অঙ্কগুলো চর্চা করো।
এনালিটিকাল:
এনালিটিকাল অনুশীলনের জন্য GRE Big Book সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই। এখানে ৩০০+ পাজল আছে, সাধারণত এগুলো থেকেই প্রতিবছর ঘুরেফিরে প্রশ্ন আসে আইবিএতে। সুতরাং এখানের প্রত্যেকটি পাজল একদম ঝালাই করে অনুশীলন করতে হবে।
Critical Reasoning এর জন্য GRE Big Book & GMAT এ দুটো বই কাজে আসবে তোমার।
অনলাইন সোর্স:
বইয়ের পালা তো গেল, প্রস্তুতির জন্য অনলাইনেও অনেক সাহায্য পাবে তুমি।
Majortest.com খুব উপকারী একটি ওয়েবসাইট, এখান থেকে প্রতিদিন অবশ্যই ইংরেজি, গণিত, এনালিটিকাল এগুলো চর্চা করবে। এখানে উত্তর ব্যাখ্যাসহ দেওয়া থাকে, তাই বুঝতে সাহায্য করবে অনেক।
নৈর্ব্যক্তিক অংশের আলোচনা শেষ হলো। এবার দেখে নেওয়া যাক লিখিত অংশে কী কী আছে।
লিখিত অংশ (৩০ মিনিট)
তোমাকে খুব চমৎকার ইংরেজি লিখতে জানতে হবে বা সাহিত্য করতে হবে এমন কোন কথা নেই। যেগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে-
হাতের লেখা পরিষ্কার ও গুছানো হতে হবে।
কোনরকম বানান ভুল করা যাবে না।
বাক্যের গঠনে বিন্দুমাত্র গ্রামাটিক্যাল Error যেন না হয়।
অনর্থক লেখা বড় না করে কম কথায় মূল বক্তব্য সাজিয়ে তুলে ধরতে হবে।
প্রস্তুতি কীভাবে নেবে তা তো জানলে। কিন্তু শুধু প্রস্তুতি নিলেই চলবে না, পরীক্ষার হলে কী কী করণীয় সেটিও জানতে হবে।
পরীক্ষার হলে যা যা অবশ্যই মাথায় রাখবে
সময় ব্যবস্থাপনা করো:
আইবিএ-র প্রশ্ন ক্লাস এইটের শিক্ষার্থীও সলভ করতে পারবে, তুমি সলভ করতে পারছো কিনা তা দিয়ে কিচ্ছু আসে যায় না। কত তাড়াতাড়ি সলভ করতে পারছো সেটি আসল বিষয়। Time Constraint এর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। বাসায় হাজার হাজারবার অনুশীলন করো প্রত্যেকটি ম্যাথ, পাজল যেন পরীক্ষার হলে দেখামাত্র মুখে মুখে সলভ করে ফেলতে পারো।
Time Management এর আরো একটি টিপস – প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই সাফল্য। তোমাকে প্রত্যেকটা Segment-এ আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। কাজেই তুমি যা পারো, শুধু সেটা নিয়েই পড়ে থাকবে না। সময়টাকে ভাগ করে নিবে, পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারো, সেগুলো ঝটপট উত্তর করে ফেলবে। বাকি সময় যেটুকু থাকে তখন অন্য প্রশ্নগুলো সলভ করার চেষ্টা করবে।
বাসায় প্রতিদিন বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর উপর নিজে নিজে মডেল টেস্ট দিয়ে Time Management অনুশীলন করবে। শেষ একমাস কোন Study break নেই। কঠোর রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে।
ভেবেচিন্তে উত্তর দাও:
আগেই বলেছি প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ মার্কস কাটা যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা চিন্তাও করবে না। তোমাকে সব পারতে হবে এটা ভাবার প্রশ্নই আসে না।
যেগুলোর উত্তর তুমি একদম নিশ্চিত সেগুলো আগে দাগাও, পাসিং মার্ক অতিক্রম করতে পারলেই নিশ্চিত থাকো তুমি সফল হবে। ৬০% মার্কস পেয়েও বহু পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়, অথচ ৯০% মার্কস পেয়েও নেগেটিভ মার্কিং এর জন্য কোন একটি সেকশনে পাসিং মার্ক পেরোতে না পারায় ফেল আসে অনেকের।
সারপ্রাইজের জন্য প্রস্তুত থাকো । এমন অনেক প্রশ্ন আসতে পারে পরীক্ষায় যেগুলো আসার কথা তুমি কল্পনাও করোনি।
STAY COOL! মাথা ঠাণ্ডা রাখো! ৯০% পরীক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হয় কেবল এই একটি কারণে। প্রশ্ন সলভ করতে সবাই পারে কিন্তু পরীক্ষার হলে মাথা গরম করে ফেললে সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে তোমার।
আত্মবিশ্বাসী হও:
BE A WINNER! পরীক্ষার হলে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই টেনশন আর ভয়কে প্রশ্রয় দিলে একদম সর্বনাশ হয়ে যাবে। মনে একটাই বিশ্বাস রাখবে – “WHO AM I? I AM A CHAMPION!”
শুধু আত্মবিশ্বাসের জোরেই দেখবে পরীক্ষা অনেক ভাল হবে।
তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য
লিখিত পরীক্ষার আলোচনা শেষ হলো। তোমরা যারা এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের আরেকটি বাধা পেরোতে হবে – মৌখিক পরীক্ষা। এখান থেকে ঝরে যাবে আরো ৬০ জন! এতদূর পথ পাড়ি দিয়ে এই পরীক্ষায় বাদ পড়ে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। তাই মৌখিক পরীক্ষা সম্পর্কেও জানতে হবে ভালভাবে।
চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা
সুন্দর ফরমাল ড্রেস পরে যাবে ভাইভাতে। ফুলহাতা শার্ট, প্যান্ট, সাথে স্যুট পরতে পারো। জুতো একদম পরিষ্কার যেন হয়। চুল আঁচড়ানো হবে। মেয়েদের জন্যও ভাইভা বোর্ডের ভাবগাম্ভীর্য অনুযায়ী যথাযথ পোষাক বাঞ্ছনীয়। তোমাকে দেখে যেন বিনীত এবং মার্জিত রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।
তোমার চলনে বলনে আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকতে হবে। ভাইভা বোর্ডে অনেকভাবে তোমাকে নার্ভাস করার চেষ্টা করা হবে, আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না।
আত্মবিশ্বাস তো থাকতেই হবে, কিন্তু তাই বলে ওভার কনফিডেন্ট হলে চলবে না। বেয়াদবি বা Inappropriate কথা-বার্তা, আচরণ ভুলেও করা যাবে না ভাইভা বোর্ডে।
ভাইভার প্রস্তুতির জন্য আলাদা করে কিছু পড়তে হবে না। সাধারন জ্ঞান, এসএসসি এইচএসসি থেকে কোন পড়া ধরা হয়না সাধারনত ভাইভাতে।
অনেকেই আছে ইংরেজিতে কথা বলায় ফ্লুয়েন্ট না। এটা নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কমন কিছু প্রশ্ন-
তোমার পরিবারে কে কী করেন, কোথায় পড়াশোনা করেছো, কেন আইবিএতে পড়তে চাও, ক্যারিয়ার হিসেবে কোন পথ বেছে নিবে, তোমার জীবনের স্বপ্ন কী ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে গুছিয়ে বলার অনুশীলন করবে। ভাইভা বোর্ডে পারো আর না পারো, ইংরেজি বলে যাবে। ইংরেজির জন্য কাউকে থামিয়ে রাখা যায়না। Accent নিয়ে চিন্তাও করবে না, accent কেউ দেখেনা, ইংরেজি বলতে পারলেই হলো।
ভাইভা বোর্ডে মূলত যাচাই করা হয় তোমার উপস্থিত বুদ্ধি, আচরণে মার্জিত বিনীত মনোভাব, আন্তরিকতা, আত্মবিশ্বাস, স্মার্টভাবে পরিস্থিতি সামলানোর ও মাথা ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা।
শেষকথা
আইবিএ বিবিএ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আমি যেমন আইবিএ এবং বিইউপি ছাড়া অন্য কোথাও পরীক্ষাই দেইনি। তোমার বুকে ১০০% বিশ্বাস থাকতে হবে তুমি আইবিএতে চান্স পাওয়ার যোগ্য।
প্রস্তুতিতে কোন অবহেলা করা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝে ঈদ, পূজোর ছুটি যাবে, এগুলোর উদযাপনে একটা ঘণ্টাও যেন নষ্ট না হয়। ঘুম, আড্ডাবাজি, ফেসবুকিং, সব বন্ধ এই কয় মাস। ভর্তি পরীক্ষার এই কয়টি দিন তুমি কতটুকু পরিশ্রম করছো তার উপর নির্ভর করবে তোমার বাকি জীবনের পথচলা।
স্বপ্নের আইবিএতে পড়ার লক্ষ্য পূরণ হোক সবার। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-ই নয়, তুমি যদি এই লেখা অনুসারে প্রস্তুতি নাও তাহলে বিইউপি, জাহাঙ্গীরনগর, নর্থ সাউথ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিবিএ পরীক্ষাতেও অনেক ভাল করবে।
WORK HARD, DREAM BIG, REACH FOR THE SKY!
0 Comments
Thanks for comments